মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে নিয়মিত প্রকাশ জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকা। সেখান থেকে কিছু বিবৃতি তুলে ধরা হলো।
১১ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:২৬
শেয়ারঃ000
৮ এপ্রিল ১৯৭১
একাত্তরে জামায়াত ইসলামীর প্রচার সম্পাদক মওলানা নুরজ্জামান ও জামায়াতের অন্যতম নেতা গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে যুক্ত বিবৃতিতে গোলাম আযম বলেন, ‘ভারত পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছে। ভারতীয় বা পাকিস্তান বিরোধী এজেন্টদের বা অনুপ্রবেশকারী যেখানেই যাবে, সেখানেই পূর্ব পাকিস্তানের দেশ প্রেমিকরা তাদের নির্মূল করবে।’
৯ এপ্রিল ১৯৭১
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে গোলাম আযম বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তনে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে ভারত প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশপ্রেমের মূলে আঘাত হেনেছে। এ ধরনের অনুপ্রবেশ এ প্রদেশের মুসলমানদের কাজেই আসবে না।’
১০ এপ্রিল ১৯৭১
ইসলামীর ছাত্র সংঘের এক বিবৃতিতে এই দিন বলা হয়, ‘দুষ্কৃতকারী ও অনুপ্রবেশকারীদরে হাত থেকে পূণ্য ভূমি পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য ছাত্র সংঘের প্রতিটি কর্মী তাদের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে যাবে। হিন্দুস্তানের ঘৃণ্য চক্রান্তের দাঁতভাঙা জবাব দেবার জন্য ছাত্র সংঘ কর্মীরা সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
১৩ মে ১৯৭১
ইসলামী ছাত্র সংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের বর্তমান দুরবস্থার জন্য ছাত্রসমাজকে দায়ী করা হয়। অথচ ছাত্র সংঘের কর্মীরাই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন ও (পাকিস্তান) সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে বেশি তত্পর। ছাত্রনামধারী ভারতের সাম্রাজ্যবাদের যে সমস্ত চর তথকথিত “বাংলাদেশ”-প্রচারণা চালিয়েছিল তারা ছাত্র সমাজের কলঙ্ক। তাদের জন্য সমুদয় ছাত্র সমাজকে দায়ী করা ঠিক নয়।’
১৭ জুন ১৯৭১
এই দিন গোলাম তার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দুষ্কৃতিকারীরা এখনও তাদের ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানো এবং বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতিকে দীর্ঘায়িত করা। পূর্ব পাকিস্তানের এমন নিভৃত অঞ্চল রয়েছে যেখানে দুষ্কৃতকারীরা জনগণকে পাকিস্তান রেডিও শুনতে দেয় না।’
২০ জুন ১৯৭১
গোলাম আযম লাহোরের বিমানবন্দরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানে অধিক সংখ্যক অমুসলমানদের সহায়তায় শেখ মুজিবুর রহমানের হয়তো বিচ্ছিন্নতার ইচ্ছা থাকতে পারে।...অবশ্য তার ছয় দফা স্বাধীনতাকে সম্ভব করে তুলতে পারত।...সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে প্রায় সকল দুষ্কৃতকারীদের উত্খাত করেছে এবং বর্তমানে এমন কোন শক্তি নাই যা সেনাবাহিনীর প্রাধান্যকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।’
২২ জুন ১৯৭১
এই দিন গোলাম আযমের এক সাক্ষাত্কার প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানরা ইসলামকে কখনও পরিত্যাগ করতে পারে না। এ কারণে তারা পাকিস্তানকেও ত্যাগ করতে পারবে না। পূর্ব পাকিস্তান ইসলাম ও পাকিস্তানের জন্য অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছে।’
২৩ জুন ১৯৭১
এক কর্মিসভায় গোলাম আযম বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানিরা সর্বদাই পশ্চিম পাকিস্তানি ভাইদের সাথে একত্রে বাস করবে।...নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ছয় দফা কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। যেসব দল খোলাখুলিভাবে বিচ্ছিন্নতার আন্দোলন শুরু করেছিল এবং স্বাধীন বাংলা গঠনের জন্য জনতাকে উত্তেজিত করেছিল সেসব দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।’
৩ আগস্ট
এই দিনে মাদ্রাসা শিক্ষা সম্মেলনে গোলাম আযম বলেন, ‘এই যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের যুদ্ধ নয়, আদর্শিক যুদ্ধ। আল্লাহর দীনকে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এই দেশকে বাঁচিকে রাখার জন্য যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতেই হবে।’
এ ছাড়া ২৫ মার্চের বর্বরোচিত হামলা সম্পর্কে গোলাম আযম বলেন, ‘২৫ মার্চের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা ছিল এদেশের মাটি রক্ষার জন্য।’ তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তিরস্কার করে বলেন, তথকথিত ‘বাংলাদেশ’ নাকি শিগগিরই একটি বাস্তব সত্যে পরিণত হবে। আল-বদর বাহিনী সম্পর্কে গোলাম আযম বলেছেন, ‘আল-বদর একটি নাম। একটি বিস্ময়! আল-বদর একটি প্রতিজ্ঞা যেখানেই দুষ্কৃতকারীদের কাছে আল-বদর সাক্ষাত্ আজরাইল।’ আর শান্তি কমিটির কাজ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী গোটা দেশে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য নিরলসভাবে শান্তি কমিটির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।’ ২৭ নভেম্বর রাওয়ালপিণ্ডিতে এক সমাবেশে বলেন, ‘কোন জাতি যুদ্ধকালে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা ছাড়াই টিকতে পেরেছে, এমন কোন নজির ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আত্মরক্ষা নয় আক্রমণই এখন সর্বোত্তম পন্থা।’
১১ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:২৬
শেয়ারঃ000
৮ এপ্রিল ১৯৭১
একাত্তরে জামায়াত ইসলামীর প্রচার সম্পাদক মওলানা নুরজ্জামান ও জামায়াতের অন্যতম নেতা গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে যুক্ত বিবৃতিতে গোলাম আযম বলেন, ‘ভারত পূর্ব পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেছে। ভারতীয় বা পাকিস্তান বিরোধী এজেন্টদের বা অনুপ্রবেশকারী যেখানেই যাবে, সেখানেই পূর্ব পাকিস্তানের দেশ প্রেমিকরা তাদের নির্মূল করবে।’
৯ এপ্রিল ১৯৭১
মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে গোলাম আযম বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তনে সশস্ত্র অনুপ্রবেশকারী পাঠিয়ে ভারত প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশপ্রেমের মূলে আঘাত হেনেছে। এ ধরনের অনুপ্রবেশ এ প্রদেশের মুসলমানদের কাজেই আসবে না।’
১০ এপ্রিল ১৯৭১
ইসলামীর ছাত্র সংঘের এক বিবৃতিতে এই দিন বলা হয়, ‘দুষ্কৃতকারী ও অনুপ্রবেশকারীদরে হাত থেকে পূণ্য ভূমি পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য ছাত্র সংঘের প্রতিটি কর্মী তাদের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে যাবে। হিন্দুস্তানের ঘৃণ্য চক্রান্তের দাঁতভাঙা জবাব দেবার জন্য ছাত্র সংঘ কর্মীরা সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
১৩ মে ১৯৭১
ইসলামী ছাত্র সংঘের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের বর্তমান দুরবস্থার জন্য ছাত্রসমাজকে দায়ী করা হয়। অথচ ছাত্র সংঘের কর্মীরাই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন ও (পাকিস্তান) সেনাবাহিনীকে সহায়তা করার ক্ষেত্রে বেশি তত্পর। ছাত্রনামধারী ভারতের সাম্রাজ্যবাদের যে সমস্ত চর তথকথিত “বাংলাদেশ”-প্রচারণা চালিয়েছিল তারা ছাত্র সমাজের কলঙ্ক। তাদের জন্য সমুদয় ছাত্র সমাজকে দায়ী করা ঠিক নয়।’
১৭ জুন ১৯৭১
এই দিন গোলাম তার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দুষ্কৃতিকারীরা এখনও তাদের ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত রয়েছে। তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানো এবং বিশৃঙ্খলাপূর্ণ পরিস্থিতিকে দীর্ঘায়িত করা। পূর্ব পাকিস্তানের এমন নিভৃত অঞ্চল রয়েছে যেখানে দুষ্কৃতকারীরা জনগণকে পাকিস্তান রেডিও শুনতে দেয় না।’
২০ জুন ১৯৭১
গোলাম আযম লাহোরের বিমানবন্দরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানে অধিক সংখ্যক অমুসলমানদের সহায়তায় শেখ মুজিবুর রহমানের হয়তো বিচ্ছিন্নতার ইচ্ছা থাকতে পারে।...অবশ্য তার ছয় দফা স্বাধীনতাকে সম্ভব করে তুলতে পারত।...সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে প্রায় সকল দুষ্কৃতকারীদের উত্খাত করেছে এবং বর্তমানে এমন কোন শক্তি নাই যা সেনাবাহিনীর প্রাধান্যকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।’
২২ জুন ১৯৭১
এই দিন গোলাম আযমের এক সাক্ষাত্কার প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানরা ইসলামকে কখনও পরিত্যাগ করতে পারে না। এ কারণে তারা পাকিস্তানকেও ত্যাগ করতে পারবে না। পূর্ব পাকিস্তান ইসলাম ও পাকিস্তানের জন্য অপরিসীম ত্যাগ স্বীকার করেছে।’
২৩ জুন ১৯৭১
এক কর্মিসভায় গোলাম আযম বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তানিরা সর্বদাই পশ্চিম পাকিস্তানি ভাইদের সাথে একত্রে বাস করবে।...নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ছয় দফা কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। যেসব দল খোলাখুলিভাবে বিচ্ছিন্নতার আন্দোলন শুরু করেছিল এবং স্বাধীন বাংলা গঠনের জন্য জনতাকে উত্তেজিত করেছিল সেসব দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।’
৩ আগস্ট
এই দিনে মাদ্রাসা শিক্ষা সম্মেলনে গোলাম আযম বলেন, ‘এই যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের যুদ্ধ নয়, আদর্শিক যুদ্ধ। আল্লাহর দীনকে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে এই দেশকে বাঁচিকে রাখার জন্য যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতেই হবে।’
এ ছাড়া ২৫ মার্চের বর্বরোচিত হামলা সম্পর্কে গোলাম আযম বলেন, ‘২৫ মার্চের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা ছিল এদেশের মাটি রক্ষার জন্য।’ তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের তিরস্কার করে বলেন, তথকথিত ‘বাংলাদেশ’ নাকি শিগগিরই একটি বাস্তব সত্যে পরিণত হবে। আল-বদর বাহিনী সম্পর্কে গোলাম আযম বলেছেন, ‘আল-বদর একটি নাম। একটি বিস্ময়! আল-বদর একটি প্রতিজ্ঞা যেখানেই দুষ্কৃতকারীদের কাছে আল-বদর সাক্ষাত্ আজরাইল।’ আর শান্তি কমিটির কাজ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘জামায়াতে ইসলামী গোটা দেশে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার জন্য নিরলসভাবে শান্তি কমিটির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।’ ২৭ নভেম্বর রাওয়ালপিণ্ডিতে এক সমাবেশে বলেন, ‘কোন জাতি যুদ্ধকালে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা ছাড়াই টিকতে পেরেছে, এমন কোন নজির ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আত্মরক্ষা নয় আক্রমণই এখন সর্বোত্তম পন্থা।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন